সঠিক ফটোকপি মেশিনটি নির্বাচন করতে গিয়ে প্রায়ই আমরা যে সমস্যায় পড়ি তা হলো এই ডিভাইসের মডেলগুলোর কিছু নাম্বার বা কোড দেওয়া থাকে যেগুলোর মানে হয়ত আমাদের জানা থাকে না ৷ এখানে আমরা তোশিবা ফটোকপিয়ার গুলোর এই মডেলগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেছি, যাতে পরবর্তীতে আপনার এই ধরনের সমস্যায় পরতে না হয়।
e-Studio মানে কী?
তোশিবার ফটোকপিয়ারগুলোর প্রত্যেকটির মডেল নাম্বারের শুরুতে খেয়াল করলে দেখা, e-Studio লেখা রয়েছে। আমরা সাধারণত স্টুডিও বলতে যা বুঝি তা হলো একটি কক্ষ বা সেট সাজিয়ে সেখানে শ্যুটিং করা হয়। একটি স্টুডিওকে যদি কোনো একটি শহরের সেটে রূপান্তর করা হয় তাহলে সেখানে শহরটির সম্ভাব্য সব উপাদানই রাখার চেষ্টা করা নয়। ই-স্টুডিও-ও অনেকটা এমনই যার পূর্ণরূপ ইলেকট্রনিক স্টুডিও। ইলেকট্রনিক এই যন্ত্রের মাধ্যমে একইসাথে প্রিন্ট, কপি, স্ক্যান, ফ্যাক্সসহ নানা সুবিধা পাওয়া যায়। তাই তোশিবার ফটোকপিয়ারগুলোর মডেল নাম্বারের শুরুতে e-Studio উল্লেখ থাকে।
এই মেশিনগুলি তাদের উদ্ভাবনী ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং বহুমুখী বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত, যা তাদের কার্যক্ষমতা বৃদ্ভির জন্য এবং আধুনিক কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন নথি-সম্পর্কিত কাজগুলি দক্ষতার সাথে পরিচালনা করার ক্ষেত্রে উপযোগী তৈরি করে তুলে।

সংখ্যার ডিজিটগুলো দিয়ে কী বোঝায়?
তোশিবার ফটোকপিয়ারের মডেল নাম্বারগুলো পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, মডেলে সংখ্যার ডিজিট থাকে চারটি। এর মধ্যে প্রথম দুই ডিজিট দিয়ে বোঝায উক্ত যন্ত্র দিয়ে প্রতি মিনিটে কয়টি পেজ প্রিন্ট করা যাবে তার সংখ্যা। উদাহরণস্বরূপ, তোশিবার একটি ফটোকপিয়ারের মডেল হচ্ছে Toshiba e-Studio 2829A। এই মডেলের 28 দিয়ে বোঝায়, যন্ত্রটির মাধ্যমে প্রতি মিনিটে ২৮ পৃষ্ঠা পর্যন্ত প্রিন্ট করা যাবে। একইভাবে তোশিবার e-Studio 2528A মডেলে প্রতি মিনিটে সর্বোচ্চ ২৫ পৃষ্ঠা প্রিন্ট করা যাবে।
তোশিবার ফটোকপিয়ারের মডেল নাম্বারের সংখ্যার চার ডিজিটের পরের দুই ডিজিটের সাথে টোনারের মডেলের সম্পর্ক রয়েছে।
যেমন ধরুন, তোশিবার একটি ফটোকপিয়ারের মডেল হচ্ছে e-Studio 2523AD A3। এখানে সংখ্যার চার ডিজিটের পরের দুই ডিজিট হচ্ছে 23। এই ফটোকপিয়ারটির জন্য যে টোনারটি ব্যবহার করা হয় তার মডেল হচ্ছে T-2323C e-studio Toner। খেয়াল করুন, টোনারের মডেল নাম্বারের সংখ্যার চার ডিজিটের পরের দুই ডিজিটও একই, 23। অর্থাৎ, পরের দুই ডিজিট দিয়ে টোনারের মডেল মেলানো হয়৷

ইংরেজি বর্ণগুলোর মানে কী?
তোশিবার ফটোকপিয়ারগুলো মডেল নাম্বারে সংখ্যার ডিজিটগুলোর শেষে ইংরেজি বড় হাতের বিভিন্ন বর্ণ দেখা যায়। কোনো মডেল নাম্বারে A, কোনোটিতে AC কিংবা AD। এসব বর্ণ দিয়ে কী বোঝায় তা হয়ত অনেকেই জানি না আমরা। চলুন এবার জানার চেষ্টা করা যাক।
- যেসব মডেল নাম্বারের শেষে শুধু A থাকে : (যেমন Toshiba e-Studio 2829A) সেসব মডেল দিয়ে বোঝায়, উক্ত যন্ত্রে ডুপ্লেক্স সুবিধা নেই। অর্থাৎ, একটি কাগজের শুধু একদিকই প্রিন্ট করা যাবে এতে৷ এর বাইরে সাধারণ প্রায় সকল কনফিগারেশনই থাকে এই মডেলে৷ প্রিন্ট, কপি এবং স্ক্যান সুবিধা রয়েছে এসব মডেলে এবং কালার প্রিন্ট করা যাবে A3 ফরমেটের কাগজে৷
- তোশিবার কিছু ফটোকপিয়ারের মডেল নাম্বারের শেষে শুধু AD থাকে : (যেমন Toshiba e-Studio 2523AD) সেসব মডেল দিয়ে বোঝায়, উক্ত যন্ত্রে ডুপ্লেক্স সুবিধা রয়েছে। অর্থাৎ, এক কমান্ডেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাগজের উভয় পৃষ্ঠা প্রিন্ট করা যাবে এই ফটোকপিয়ারে। এর বাইরে এটিতে অটোমেটিক ডকুমেন্ট ফিডার (ADF) সুবিধা রয়েছে যার মাধ্যমে একাধিক কাগজ এক কমান্ডেই একসাথে প্রিন্ট করা যাবে৷ এছাড়া, অন্যান্য নিয়মিত ফিচারগুলো থাকবে এই মডেলের ফটোকপিয়ারে৷
- আবার তোশিবার কিছু ফটোকপিয়ারের মডেল নাম্বারের শেষে শুধু AM থাকে : (যেমন Toshiba e-Studio 2323AM) সেসব মডেল দিয়ে বোঝায়, এই মডেলে ADF ও ডুপ্লেক্স সুবিধার পাশাপাশি নেটওয়ার্ক সিস্টেম রয়েছে। এই ধরনের মডেল মূলত প্রাতিষ্ঠানিক কাজে ব্যবহার করা হয়। অফিসে থাকা একাধিক কম্পিউটারের সাথে এই ফটোকপিয়ারের সংযোগ দিয়ে ফটোকপিয়ারে কোনো কমান্ড ব্যতীত প্রিন্ট করা যাবে৷
- অন্যদিকে তোশিবার কিছু ফটোকপিয়ারের মডেল নাম্বারের শেষে শুধু AC থাকে : (যেমন Toshiba e-Studio 2020AC) সেসব মডেল দিয়ে বোঝায়, এই মডেলে ADF, ডুপ্লেক্স সুবিধা এবং নেটওয়ার্ক সিস্টেমের পাশাপাশি উন্নতমানের কালার প্রিন্টিংয়ের সুবিধা রয়েছে। এই মডেলের ফটোকপিয়ারে প্রেস কোয়ালিটির কালার প্রিন্টের সুবিধা পাওয়া যাবে।
- তোশিবার কিছু ফটোকপিয়ারের মডেল নাম্বারে A3 লেখা দেখতে পাওয়া যায় : (যেমন Toshiba e-Studio 2523A A3) সেসব মডেল দিয়ে বোঝায়, এই মডেলে অন্যান্য সাইজের সাথে A3 সাইজের কাগজ ও প্রিন্ট করা যাবে।
মূল কথা হচ্ছে, তোশিবা ফটোকপিয়ার এর মডেলভেদে ফিচারের ভিন্নতা দেখা যায়। মডেল নাম্বারগুলো দিয়ে মিনিটে উক্ত ফটোকপিয়ারে কত পৃষ্ঠা প্রিন্ট করা যায়, ডুপ্লেক্স সুবিধা আছে কিনা কিংবা নেটওয়ার্কিং সুবিধা-ই বা রয়েছে কিনা এসব বিষয়ে জানা যায়৷